ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের রক্ত চুষে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে শুধু শুনবেন লুটপাট, হরিলুট আর দুর্ভিক্ষ। ‘৭২ থেকে ‘৭৪ দুর্ভিক্ষ দেখেছি। সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনছি।

আজ বুধবার (২ মার্চ) দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। এতে ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন মাস্টার ও অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।

রিজভী বলেন, আজকের এই সভা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে। মোটা চাল ৬০-৬৫ টাকা কোথাও কোথাও ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম ২০ থেকে ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। আটা, চিনি, পেঁয়াজ সবকিছুর দাম অনেক বেশি। এই সময় রবিশস্যের মৌসুম। এই সময়ে শাকসবজি হয়, বিভিন্ন ধরনের ডাল হয়। চৈত্র্য মাসে যেমন বাড়িতে আগুন লাগলে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে, তেমনি করে বাজারে জিনিসপত্রের দামে আগুন লেগেছে। যারা মধ্য বা নিম্ন আয়ের মানুষ, পোশাক শ্রমিক, ভ্যান-রিক্সার চালক তারা নিঃশেষ হতে হতে রাস্তার সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন।

সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, খবরের কাগজ দেখেন। গতকালই ১৯ থেকে ২৫ টাকা লিটারে বৃদ্ধি পেয়েছে। খোলা বাজারে যে তেল ১৪৩ টাকায় লিটার বিক্রি হওয়ার কথা, তা বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮০ টাকায়। সাধারণ দোকানদাররাও বলছেন আমরা করব কী? অনেক দোকানি সোয়াবিন তেল পাইকারদের কাছ থেকে কেনা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। যারা পরিবেশক তারাই তো দাম বৃদ্ধি করছে, আমি যদি দাম বৃদ্ধি না করি তাহলে আমার লোকসান হবে। এ কারণে অনেক দোকানদার সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। পাইকার কারা? তারা হচ্ছে সিন্ডিকেট। আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। তারাই তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।

সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নাকি বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানাচ্ছে। কানাডা বানাচ্ছে। তিনি নাকি বাংলাদেশকে থাইল্যান্ডের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আসলে এই সরকার মানুষের কোনো কল্যাণ করে না। এরা লুটেরা, দানব এবং দুর্ভিক্ষের সরকার। তারা গত ১১-১২ বছরে ১১ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এরা কানাডায় বেগমগঞ্জ বানিয়েছে। মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোম বানিয়েছে। এই সরকার জনগণের রক্ত চুষে খাচ্ছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এই সিইসি এই সরকারের সুবিধাভোগী। তাকে একবার হাইকোর্ট শোকজ করেছিল। এই মানুষ কী করে নির্বাচন কমিশনের প্রধান হতে পারেন? আইনে স্বাধীন থাকলেও ব্যক্তির হৃদয় যদি স্বাধীন না হয় কোনোদিন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আর শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে- এটা কোনো পাগলেও বিশ্বাস করে না।

 

কলমকথা/ বিথী